সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের কেন অংশ নেয়া উচিত?

সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের কেন অংশ নেয়া উচিত?

সহশিক্ষা কার্যক্রম হলো পাঠ্যবইয়ের বাইরে নিজের পছন্দের অন্যকোনো বিষয় যেমন- গান, নাচ, আবৃত্তি, বক্তৃতা, বিতর্ক, রচনা লিখন, অভিনয়, কুইজ প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। এসব কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী এমন কিছু গুণ অর্জন করে যা পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়ন করে অর্জন করা যায় না। তাই শিক্ষার্থীদের উচিত সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া।

সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়ার উপকারিতা

সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ

সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিলে নিজের সুপ্ত প্রতিভা বা গুণ সম্পর্কে জানতে পারবে। নাচ, গান, আবৃত্তি, খেলাধুলা, বিতর্ক, অভিনয়, সাহিত্যচর্চা ইত্যাদি নানা ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে তোমার পছন্দের বিষয় কোনটি খুঁজে বের করো। যে বিষয়ে তোমার আগ্রহ আছে এবং যে বিষয়ে তুমি স্বচ্ছন্দ সেই বিষয়টিতেই তুমি অংশগ্রহণ করতে পারো। পছন্দের বিষয় একাধিক হলেও চিন্তার কিছু নেই। রুটিন করে চর্চা করতে পারো। শুধু খেয়াল রাখবে সহশিক্ষা কার্যক্রমের জন্য যেন তোমার পাঠ্যক্রমের পড়াশোনাতে ব্যাঘাত না ঘটে।

দলবদ্ধ কাজ

সব সহশিক্ষা কার্যক্রমই দলগত কাজ। কখনো কখনো একাকি চর্চা করা সম্ভব হলেও উপস্থাপনের সময় দলবদ্ধভাবেই কাজ করতে হয়। তাই সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিলে দলগত কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ে। একই বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন মানসিকতার মানুষের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জানা যায়। এতে সমৃদ্ধ হয় অভিজ্ঞতা যা পরবর্তী সময়ে কর্মজীবনে কাজে লাগে।

সৃজনশীলতার বিকাশ

সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ফলে একজন শিক্ষার্থীর অন্তর্গত প্রতিভা বিকশিত হয়। তাছাড়া দলগত কাজ করার সময় সে নানারকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। তখন তাকে নিজের মতো করে সমাধানের পথ বের করতে হয়। এর ফলে তার সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে।

সহশিক্ষা কার্যক্রম

মনের প্রফুল্লতা বাড়ায়

পাঠ্যবইয়ের পড়ার চাপ, পরীক্ষার দুশ্চিন্তা ইত্যাদির ফলে একজন শিক্ষার্থী হয় বিষণ্ণ অবসাদগ্রস্ত। সহশিক্ষা কার্যক্রম তাকে এই চাপের হাত থেকে বাঁচায়। নিজের শখ, ভালো লাগার কাজে সম্পৃক্ত হতে পেরে তার মন প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। দমবন্ধ পরিবেশ থেকে সে কিছু সময়ের জন্য হাঁফ ছেড়ে বাঁচার অবকাশ পায়।

আনন্দময় সামাজিক জীবন

সহশিক্ষা কার্যক্রমের অন্তর্গত বিষয়গুলো শিল্প-সাহিত্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সংস্কৃতিচর্চার এই অভ্যাস পরে সামাজিক অনুষ্ঠান বা বিশেষ দিনগুলোকে আনন্দঘন করে তুলতে কাজে লাগে।

সময় সাশ্রয়ের শিক্ষা

পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ফলে একসঙ্গে একাধিক কাজ করার দক্ষতা অর্জন করে একজন শিক্ষার্থী। এর ফলে সে সময় সাশ্রয় করার কৌশল রপ্ত করে ফেলে।

আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি

পড়াশোনাতে ভালো না হলেই যেকোনো শিক্ষার্থী হীনমন্যতায় ভোগে। নিজেকে ব্যর্থ মনে করে। কিন্তু পৃথিবীতে বহু শিল্পী, সাহিত্যিক, চিত্রকর, গায়ক, গীতিকার অতুল কীর্তি রেখে গেছেন যারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ভালো ছিলেন না।

পড়াশোনাতে তেমন ভালো না করতে পারলেও কোনো শিক্ষার্থী যদি সহশিক্ষা কার্যক্রমের কোনো একটিতে দক্ষতা আছে বলে চিহ্নিত করতে পারে তাহলে তাকে আর জীবনে হতাশা টেনে ধরবে না। এটি নিয়ে সে পরবর্তী জীবনেও এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারে।

লেখক : বিপুল জামান

Leave a Reply